মাটি মামুন, রংপুর :
রংপুরের পীরগাছা উপজেলাধীন পারুল ইউনিয়নের নাগদাহ আলাইকুমারী পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডে বিধিবহির্ভূতভাবে সমিতির এজিএম (অ্যানুয়াল জেনারেল মিটিং) করা হচ্ছে এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে উত্তেজনা দেখা দিলে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে, রংপুর জেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান আলী ও সোসিওলজিস্ট লুৎফা খাতুন বুবলির নির্দেশে হামলার ঘটনায় থানায় অভিযোগের ৮ দিনেও মামলা রেকর্ড করেনি পীরগাছা থানা পুলিশ। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,গত ৩০ জানুয়ারি দুপুর ১.৩০ ঘটিকায় সংবাদ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে নাগদাহ আলাইকুমারী সমবায় সমিতিতে দৈনিক আমাদের কন্ঠের জেলা প্রতিনিধি হারুন অর রশিদ বাবু উপস্থিত হয়।সেসময় সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম ও সেক্রেটারি আবু সাঈদের বিরুদ্ধে বাস্তবায়নকৃত প্রকল্পের লভ্যাংশের টাকা আত্মসাৎ ও গাছ বিক্রির সমূদয় টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়ে সাধারণ সদস্যদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পূর্বতন নোটিশ ছাড়াই বিধিবহির্ভূতভাবে সাধারণ সভা চলছিল।সভায় সাংবাদিক উপস্থিত সাধারণ সদস্যদের ন্যায় সভার ভিডিও ধারণ করছিলো।সভার বক্তব্যে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান আলী বলেন, দূর্নীতি বাংলাদেশের এমপি মন্ত্রী সবাই করে থাকে কই সেখানে তো কোন খবর প্রকাশ হয়না। দুইশত টাকা হলে সাংবাদিক দিয়ে উল্টা পাল্টা রিপোর্ট করা যায়।তার বক্তব্যের পর এলজিইডি রংপুর সদর উপজেলার কমিউনিটি অর্গানাইজার জাহিদুল হাসান বলেন কোন জায়গায় সমস্যা নাই?প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও সমস্যা আছে।সেই সমস্যা শুনলে তো আপনাদের মাথাই নষ্ট হয়ে যাবে।বক্তব্য ভিডিও করা হচ্ছে এটি দেখে সরকার ও রাষ্ট্র বিরোধী উক্ত বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচারিত হইলে তার স্যারদের ক্ষতি হইবে মনে করে এলজিইডি এর সোসিওলজিস্ট লুৎফা খাতুন বুবলি,পীরগাছা উপজেলা এলজিইডির সার্ভেয়ার জাফর আলী বিশ্বাস,উপজেলা এলজিইডি ফ্যাসিলেটর সিরাজুল ইসলাম,এলজিইডি এর কর্মচারী মিথুন সাংবাদিকের হাতে থাকা মোবাইল ফোন কেড়ে নিতে বলার পর আশরাফুল ইসলাম,মমিনুল ইসলাম,বুলু মিয়া,আব্দুল মাজেদ সম্মিলিতভাবে সাংবাদিককে আক্রমণ করে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পরও এলজিইডি এর নির্বাহী প্রকৌশলী জোর পূর্বক মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও ডিলেট করে দেয় ও শফিকুল ইসলাম মোবাইল ভাংচুর করে এবং নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে সাংবাদিককে সম্মিলিতভাবে মারপিট করে আহত করে।পরবর্তীতে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে ৪ ফেব্রুয়ারি থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেন সাংবাদিক হারুন অর রশিদ বাবু।কিন্তু এজাহার দায়েরের ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে মামলা রেকর্ড করেনি পীরগাছা থানা পুলিশ। সাংবাদিক হারুন অর রশিদ বাবু জানান, চিকিৎসা শেষে লিখিত অভিযোগ জমা দিতে আমার বিলম্ব হয়েছিলো। লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও আমার সঙ্গে আজ পর্যন্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা কোন যোগাযোগ করেনি ও মামলাও রেকর্ড করেনি।আমি একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমার উপর হামলার ন্যায্য বিচার চাই। পীরগাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার সরকার জানান,অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমি নিজেই ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেছি।সরকারি চাকুরিজীবীদের নামে মামলা করতে পূর্বানুমতির প্রয়োজন হয়। তদন্ত চলমান রয়েছে।উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে ও ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করে এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এবিষয়ে কথা জানতে রংপুর জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।