1. admin@jashorerdarpan.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাদেশ প্রেসক্লাব মানিকগঞ্জ জেলা শাখার কার্যকারী কমিটির কমিটির অনুমোদন যশোর জেলা যুব দল নেতা নাসিম রেজা’কে দৈনিক ফুলতলা প্রতিদিন পত্রিকার বার্তা সম্পাদক করায় যুবদলের পক্ষ থেকে ফুলের শুভেচ্ছা বগুড়া আদমদিঘীতে ভবনের কাজ শেষ হয়নি ৫ বছরেওবিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ট্রেনে কাটা  পড়ে অজ্ঞাতনামা এক তরুণের মৃত্যু বগুড়ায় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও বজ্রপাত রোধে তাল গাছের চারা রোপণ বগুড়া  সদর থানায় অগ্নিসংযোগ ঘটনার মামলায় তিন জন গ্রেপ্তার  কেশবপুরে নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে সুধীজনের মতবিনিময় যশোরের কুয়াদায় যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার বাংলাদেশ পুলিশের অধস্তন কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের ২০২৪ সালের বিভাগীয় পদোন্নতি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরা খলিশাখালির মৎস্যঘের জবর দখল ও লুঠপাটের হুমকিতে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

কেশবপুরে বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা পানিবন্দি মনোহরনগর গ্রামের মানুষের, কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের এলাকা পরিদর্শন

দৈনিক যশোরের দর্পণ ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০২৪
  • ৬৮ বার পঠিত

তন্ময় মিত্র বাপী, ব্যুরো প্রধান, কেশবপুর :

এখনো ফাল্গুন মাস শেষ হয়নি, বর্ষামৌসুমের ডের বাকী, তারপরও গ্রামে গেলে মনে হয় বর্ষাকাল। ঘরের মানুষ ‘উঠানে পানি থাকায় ঘর থেকে বের হয়ে বাঁশের সাঁকোর উপর ভরসা করে সবকিছু করতে হয়। এ পরিবেশে(শিক্ষার্থীদের)পড়াশোনায় ঠিকমতো মনও বসে না। প্রায় ৩ মাস আমরা উঠানে কাঁদাপানির কারণে খেলাধুলা করতে পারিনি।’ বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াতের সময় এসব কথাগুলো বলছিল কেশবপুর উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের মনোহরনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমিতা হালদার ও তার ভাই সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমিত হালদার। মাছের ঘেরের পানি সেচ দিয়ে বাগডাঙ্গা-মনোহরনগর খালে ফেলায় পলিতে নদনদী ভরাট হওয়ার কারণে নিষ্কাশিত হতে না পেরে পানি উপচে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থা চলছে গত কয়েক বছর ধরে। মনোহরনগর-বাগডাঙ্গা গ্রামের শতাধিক পরিবারকে বছরের ছয় মাস পানিবন্দি অবস্থায় থাকতে হয়। বাকি ছয় মাস কাঁটে কাদা ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে। গ্রাম দুটির মানুষের ঘর থেকে বের হতে বাঁশের সাঁকোর উপর ভরসা করে চলাচল করতে হয়। ওই এলাকার পরিবেশ হয়ে পড়েছে স্বাস্থ্যহানিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। সরেজমিন উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের মনোহরনগর-বাগডাঙ্গা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, এবারও শীতকালে মানুষের বাড়িঘরে পানি উঠে আসায় ওই এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। মনোহরনগর গ্রামের মানুষের বাড়িতে এখনো পানি রয়েছে। রান্নাবান্নাসহ সাংসারিক কাজ করতে গিয়ে গৃহবধূরা পড়েছেন বিপাকে। পানির সঙ্গে সংগ্রাম করেই টিকে থাকতে হচ্ছে তাদেরকে। মনোহরনগর গ্রামের গৃহবধূ নমিতা হালদার (৩৮) জানান , ‘উঠানে পানি থাকায় ঘর থেকে পাকা রাস্তায় উঠতে ও সাংসারিক কাজ করতে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। কৃষক অনাদি হালদার (৪৫) জানান, গত ৬ মাস ধরে গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবারের বাড়িতে পানি উঠে আসায় পরিবেশ পরিস্থিতি হয়ে পড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। বাড়ি থেকে রাস্তায় বের হতে বাঁশের সাঁকো ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। এখন কিছু কিছু বাড়ি থেকে পানি কিছুটা নেমে গেছে। গ্রামের ষাটউর্ধ্ব বৃদ্ধা কালিদাসী রায় জানান , উঠান থেকে পানি সরে যাওয়ার পর কাদা ও স্যাঁতসেঁতে হয়ে বাড়ির পুরো পরিবেশই নষ্ট হয়ে পড়ে। কাঁদা ও পানির ভেতর দিয়েই সাংসারিক কাজ করতে হয়। রবিন সরকারের স্ত্রী কবিতা মন্ডল বলেন, গত ৫ বছর এলাকায় বোরো আবাদ হয়নি। যে কারণে গো-খাদ্যের জন্য তীব্র সংকটে পড়তে হয়। মনোহরনগর-বাগডাঙ্গা গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার বৈদ্যনাথ সরকার সাংবাদিকদের জানান , গ্রামের মানুষের বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। শীতকালে পানির মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে ওই সমস্ত বাড়ির মানুষদের পড়তে হয় চরম বিপাকে। পঁচা কাঁদাপানির কারণে মানুষের জীবনে এক দুর্বিষহ পরিবেশ নেমে আসে। ২৭ বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক বাবর আলী সাংবাদিকদের জানান, নদ-নদী পলিতে ভরাট হওয়ায় মাছের ঘেরের পানি সেচ দিয়ে বাগডাঙ্গা-মনোহরনগর খালে ফেলায় সেই পানি নিষ্কাশিত হতে না পেরে উপচে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে এলাকার বিলগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। যে কারণে এলাকার কৃষকরা প্রতি বছর বোরো আবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ভবদহ অঞ্চলের হরি নদী খননসহ নদী অববাহিকার যে কোন একটি বিলে জোয়ার-আধার (টিআরএম) চালু করা না হলে এলাকার এ সমস্যা সমাধান হবে না। এ ব্যাপারে উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসীম উদ্দীন জানান, এলাকার জলাবদ্ধতার বিষয়টি উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় উত্থাপন করা হয়েছে। এ সম্পর্কে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যও সভায় বলা হয়। যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন সিকদার সাংবাদিকদের জানান , ভবদহ সংলগ্ন ২৭ বিলের পানি কাটাখালীর স্লুইসগেট হয়ে ডায়ের খালের আট ব্যান্ড স্লুইসগেট দিয়ে শ্রী নদীতে নিষ্কাশন হতো। কিন্তু শ্রী নদীর তলদেশ পলিতে ভরাট হওয়ার কারণে বিলের চেয়ে নদী উঁচু হয়ে যাওয়ায় বিলের পানি সরছে না। ভবদহ প্রকল্পে শ্রী নদী অন্তর্ভুক্ত আছে। ভবদহ প্রকল্প অনুমোদন না হলে আপাতত এ সমস্যার সমাধান হবে না। তার পরেও সপ্তাহে কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোডের লোকেরা পানি বন্দি মনোহর নগর গ্রামটি পরিদর্শন করেন। আপাতত বিকল্প কোনো উপয় বের করা যায় কিনা সে চেষ্টা করা হচ্ছে।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৪ দৈনিক যশোরের দর্পণ
Theme Customized BY LatestNews