দীনেশ চন্দ্র রায় পাইকগাছা ( খুলনা ) প্রতিনিধি,
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অধীনস্ত তিনটি মৌজার ১৩১টি ভিপি(অর্পিত সম্পত্তি) কেসের ১২৭.৩৭ একর সরকারি সম্পত্তিতে থাকা কোটি টাকা মূল্যের গাছ চুরি করে কেটে বিক্রির মহোৎসব চলছে।এমন অভিযোগ পেয়ে শনিবার দুপুরে সরেজমিনে অভিযোগের তথ্যানুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়,উপজেলার রাড়ুলী মৌজায় ১৯টি ভিপি কেস ভুক্ত ১১.০১একর জমি,কাটিপাড়া মৌজায় ৯৫টি ভিপি কেসভুক্ত ৯৭.৭১একর জমি এবং বাকা মৌজায় ১৭টি ভিপি কেসভুক্ত ১৮.৬৫একর জমি। এসব জমিতে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় গাছ। যার বর্তমান বাজার মূল্য কোটি টাকার উর্দ্ধে। এসব জমির মধ্যে কিছু জমি ভিপি কেসের মাধ্যমে ইজারা নবায়ন চলমান আছে এবং ইজারা গ্রহীতাগন সরকারের পক্ষে দখলে আছেন। আর কিছু জমি নিয়ে দেওয়ানী মামলা চলমান ও আদালতের নির্দেশে ইজারা নবায়ন বন্ধ রয়েছে।তবে পূর্বতন ইজারা গ্রহীতাগন দখলে আছেন। বাকি কিছু জমি কোন দিন ইজারা প্রদান করা হয়নি বলে সংশ্লিষ্ঠ অফিস সুত্রে জানা গেছে। সরকারিভাবে এসব জমি ভিপি তালিকা ভুক্ত হয়ে গেজেট প্রকাশ হয়। এরমধ্যে অধিকাংশ জমি দাবী করে তা ভিপি তালিকা থেকে অবমুক্তির জন্য মামলা করেন। যা চলমান আছে। সরকারি বিধিমোতাবেক এসব সরকারি সম্পত্তি ইজারা গ্রহীতাগন সরকার পক্ষে দখল নিয়ন্ত্রন সহ ভোগদখল করবেন। তবে এসব সম্পত্তির আকৃতি,প্রকৃতি পরিবর্তন বা কোন ক্ষতিসাধন করতে পারবেন না। তবে ইজারা গ্রহীতাগন সরকারি সম্পত্তিতে থাকা মূল্যবান গাছ-পালা চুরি করে কেটে তা বিক্রি করছেন। উপজেলার রাড়ুলী গ্রামের মৃত শামসুর গাজীর পুত্র হাবিবুর গাজী জানান,তিনি রাড়ুলী মৌজার ৪.১৫একর জমি ভিপি থেকে অবমুক্তির দাবিতে ২৪০৮/১৩নং একটি মামলা করেন। মামলাটি চলমান ও বিচারাধীন আছে। ঐ জমি রাড়ুলী গ্রামের মৃত মিরাজ গোলদারের পুত্র সামাদ গোলদার ইজারা গ্রহন করেছেন। ইতিমধ্যে তিনি ঐ জমিতে থাকা বড় বড় কয়েকটি মেহগনি ও শিশু শিরিষ গাছ চুরি করে কেটে বিক্রি করেছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য লক্ষাধিক টাকা। অভিযোগকারি হাবিবুর গাজী দুঃখ করে বলেন যে,সরকারি আইন অমান্য করে সরকারি গাছ বিক্রির বিষয়টি রাড়ুলি ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও সহকারি কমিশনার ভূমি পাইকগাছা কে অভিযোগ করি। তারা ঘটনাস্থলে এসে সত্যতা পেলে ও অজ্ঞাত কারনে আজও কোন ব্যবস্হা গ্রহন করেননি। সেকারন সরকারি অন্যান্য জমিতে থাকা গাছ কাটার ধুম পড়েছে। অভিযুক্ত সামাদ গোলদার জানান,আমি ইজারা নেওয়া জমির গাছ কেটেছি, তাতে কি হয়েছে?এ বিষয়ে রাড়ুলী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা লতিফা আখতার গাছ কাটার বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে জানান,গাছ কাটার বিষয়ে জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পেয়ে সরকারি গাছ কাটতে নিষেধ করি এবং বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ কে জানাই।তিনি আরো জানান,এর আগের একটি সরকারি গাছ চুরির ঘটনায় সরকারি সম্পদ রক্ষা করতে যেয়ে মিথ্যা মামলায় পড়েছি। উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি মোঃ আরিফুজ্জামান জানান,সরকারি গাছ কাটার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই এবং কর্তনকৃত গাছ জিম্মায় রেখে আসি।আর এলাকার সচেতন মহল সরকারি জমি এবং জমিতে থাকা গাছ সংরক্ষনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।