ফরিদ হুসাইন, মাগুরা থানা প্রতিনিধি :
“চাকরি নয় সেবা” এ শিরোনামকে সামনে রেখে দেশ সেবায় অগ্রগামী তরুণদের সংগ্রহ ও সুযোগ প্রদান করার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ যে মিশনে নেমেছে তারই অংশ হিসেবে মাগুরা জেলায় সম্পন্ন হলো ২০২৪ জানুয়ারিতে প্রকাশিত ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগের চুড়ান্ত পর্যায়। মাগুরা পুলিশ লাইন্স এ আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন নিয়োগ বোর্ডের সম্মানিত সভাপতি ও পুলিশ সুপার জনাব মোঃ মশিউদ্দৌলা রেজা,পিপিএম (বার) মহোদয়। পুলিশ সুপার মহোদয়ের সভাপতিত্বে ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত নিয়োগ বোর্ডের সমন্বয়ে সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে ২০ জন পুরুষ এবং ০৩জন নারী প্রার্থী কৃতকার্য হয়েছেন। নিয়োগ পদ্ধতির স্বচ্ছতায় মোট ২৩ জন প্রার্থী চুড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। যেকোনো চাপ, তদবির আর দুর্নীতিবাজ প্রতারক চক্রের বলয় ছিন্ন করে গেল তিনবারের মতো এবারও একটি স্বচ্ছ, দুর্নীতি মুক্ত ও নিরপেক্ষ নিয়োগের জন্য জেলা পুলিশ শুরু থেকেই তৎপর ছিল। মাগুরা জেলা পুলিশের অভিভাবক,পুলিশ সুপার জনাব মোঃ মশিউদ্দৌলা রেজা,পিপিএম (বার),পুলিশ সুপার মাগুরা মহোদয় আগে থেকেই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতি হিসেবে পুলিশের একটি দক্ষ টিমের সাহায্যে মাগুরাবাসীকে সতর্ক করে জানান যে,নিয়োগের ক্ষেত্রে সব প্রার্থীর মূল্যায়নের একমাত্র ভিত্তি হবে মেধা ও যোগ্যতা। শুধুমাত্র সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি সর্বমোট ১৬০ টাকার বিনিময়ে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মোট ২৩ জন প্রার্থী চাকরির জন্য নির্বাচিত হবেন। এক্ষেত্রে, কোনো প্রকার অবৈধ আর্থিক লেনদেন কিংবা অনৈতিক যোগাযোগ প্রার্থীর অযোগ্যতা বলে বিবেচিত হবে এবং একই সঙ্গে সাইবার স্পেসে ও মাঠপর্যায়ে গোয়েন্দা তৎপরতা চালানো হয় যাতে এ নিয়োগকে কেন্দ্র করে কোনো প্রতারক চক্র বা স্বার্থান্বেষী মহল কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত বা ভিকটিমাইজড করতে না পারে। আর এভাবেই কঠোর নজরদারি বজায় রেখে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও সময়োপযোগী নিয়োগ পদ্ধতির মাধ্যমে তিনটি কঠোর ধাপ পেরিয়ে প্রায় ১২৫০ প্রার্থীর মধ্যে চুড়ান্তভাবে সুপারিশ প্রাপ্ত হলেন ২৩ জন। এর মধ্যে নারী প্রার্থী ০৩ জন ও পুরুষ প্রার্থী ২০ জন। গত ০৮,১০ ও ১১ মার্চ মাগুরা পুলিশ লাইন্স মাঠে প্রার্থীদের কাগজপত্র যাচাই সহ ফিজিক্যাল ইনড্যুরেন্স টেস্ট সম্পন্ন হয়। এতে উত্তীর্ণ ২২৮ জন প্রার্থীদেরকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশনা মোতাবেক লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষার খাতা কোডিং করে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে পাঠানো হয় এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার খাতা মূল্যায়ন শেষে মাগুরা জেলায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের খাতা পাঠায়। উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে থেকে ৪৯ জনের ভাইভা পরীক্ষা পুলিশ লাইনস মাগুরায় ০৪ এপ্রিল নির্ধারিত ভাইবা বোর্ডে গ্রহণ করা হয়। মৌখিক পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হন ২৩ জন প্রার্থী। পুলিশ সুপার জনাব মোঃ মশিউদ্দৌলা রেজা, পিপিএম(বার) বলেন চাকরি পাওয়ার জন্য প্রার্থীরা অনেক সময় সুপারিশ এবং ঘুষ দেওয়ার চিন্তা করেন। এজন্য বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগও করতে থাকেন। তখন চাকরিপ্রার্থীদের দুর্বলতার সুযোগ নেয় দালালরা। তারা চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রার্থীদের সঙ্গে অবৈধ অর্থ লেনদেন করেন। পরবর্তীতে নিজ যোগ্যতায় চাকরি পেলেও ভাবেন হয়তো অবৈধ অর্থ লেনদেনের কারণেই চাকরি পেয়েছেন। তবে এসব বিষয় মাথায় রেখে চতুর্থবারের মতো নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয় এবং সতর্কতার সাথে তা বাস্তবায়ন করা হয়। জেলা পুলিশ সুপারের এই শক্ত অবস্থানের কারণে ঘুষ ও সুপারিশ ছাড়া ২৩ জনের পুলিশে চাকরি হয়েছে। চুড়ান্ত সুপারিশ প্রাপ্ত প্রার্থীদের ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করেন সুপার মাগুরা মহোদয়। এ স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণে সমর্থ হওয়ায় মাগুরাবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে জনগণের পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এ সময় নিয়োগ বোর্ডের সদস্য জনাব মোঃ দোলন মিয়া ,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল),নড়াইল জনাব এস.এম.আল-বেরুনী ,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ট্রাফিক),খুলনা নিয়োগ কার্যক্রম সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন জনাব মোঃ কলিমুল্লাহ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ)মাগুরাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পুলিশ সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোর থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল দৈনিক যশোরের দর্পণ নিয়মিত পড়ুন ও বিজ্ঞাপন দিন
Copyright © 2024 দৈনিক যশোরের দর্পণ. All rights reserved.