মোঃ রাজু মিয়া, স্টাফ রিপোর্টার রংপুর :
দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলমানদের বড়ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। আর এই উৎসবকে কেন্দ্র করে রংপুরের ছোট-বড় মার্কেট-শপিংমল এখন লোকে লোকারণ্য। শেষ সময়ে পরিবার-পরিজন ও প্রিয়জনের জন্য নতুন কাপড় কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সবাই।সকাল থেকে মধ্যরাত, কিছু এলাকায় ভোররাত পর্যন্ত খোলা রাখা হচ্ছে দোকানপাট। জমজমাট বেচাকেনা চলছে ফুটপাতেও। সবমিলিয়ে ঈদের আগের এই সময়ে কেনাকাটা করতে সব বিপণিবিতানে ঢল নেমেছে মানুষের। ঈদের পর রয়েছে পহেলা বৈশাখ।গতকয়েক বছর ধরে পহেলা বৈশাখ রোজার মধ্যে পালন করা হয়েছে। কিন্তু এবারের পহেলা বৈশাখ ঈদের পরে। সেজন্য কিছুটা বেশি বেচাবিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।সরেজমিনে দেখা যায়, রংপুর নগরীর জেলা পরিষদ কমিউনিটি মার্কেট থেকে শুরু করে সুপার মার্কেট, পায়রা চত্বর, সেন্ট্রাল রোড, হাড়িপট্টি, দেওয়ানবাড়ি, জাহাজ কোম্পানি শপিং কমপ্লেক্স, গোল্ডেন টাওয়ার, সিটিপ্লাজা, মতিপ্লাজা, জিএল রায় রোডের বড় বড় শো রুম, আরএমসি মার্কেট, জামাল ও ছালেক মার্কেট, ইসলামপুর হনুমানতলাসহ আশপাশে এলাকায় কেনাকাটায় মানুষের ঢল। এসব এলাকার অধিকাংশ ছোট-বড় মার্কেট এবং শপিং সেন্টার, দোকানগুলোতে পাঞ্জাবি-পায়জামা, শার্ট-প্যান্ট, টিশার্ট, গেঞ্জি, শাড়ি কাপড়, থ্রি-পিস, বাচ্চাদের পোশাক, টুপিসহ বিভিন্ন চাকচিক্যময় পোশাকের ব্যাপক সমাহার। নজরকাড়া ডিজাইন ও রকমারি পোশাকে মার্কেটগুলোর দোকানপাট ঝলমল করছে। একেবারে শেষ সময়ে রংপুরের পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও এবং গাইবান্ধাসহ বিভাগের আট জেলার মানুষ নতুন ডিজাইনের ভালো পোশাক কেনার আশায় ছুটে আসছেন বিভাগীয় শহর রংপুরে।ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে রংপুরের ফুটপাতের দোকানগুলোতে নিম্নআয়ের মানুষের ভিড় বেড়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষ ফুটপাতের বিভিন্ন দোকানেভিড় জমাচ্ছেন এবং স্বল্পমূল্যে ঈদের কেনাকাটা করছেন। নগরীর জাহাজ কোম্পানি মোড়, সিটি বাজার, স্টেশন রোড ও পুলিশ লাইন্সের সামনে রাস্তার পাশের দোকানগুলো নিম্নআয়ের মানুষদের ভরসাস্থল। ফুটপাতের দোকানগুলো থেকে শিশুদের পোশাকসহ বড়দের শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি-পাজামা, সালোয়ার-কামিজ, জুতা-মোজা, স্যান্ডেল, ব্যাগ, বেল্টসহ প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করছেন তারা।এদিকে, ঈদকে কেন্দ্র করে জমে ওঠেছে নতুন টাকার হাট। নতুন টাকার বিভিন্ন বান্ডিলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে নগরীর রাজা রামমোহন মার্কেটের সামনে পুরাতন টাকার দোকানে নতুন টাকা কিনতে দেখা যায় মানুষজনকে।পুরাতন টাকার দোকান হলেও সারা বছরই এখানে নতুন টাকা পাওয়া যায়, তবে ঈদের আগে বেচা কেনা বেশি হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা। প্রতিবছরের মতো এবারেও এসব দোকান থেকে দুই টাকা ও পাঁচ টাকার নোটের এক হাজার টাকার বান্ডিলে ক্রেতাদের অতিরিক্ত টাকা গুণতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।অন্যদিকে, পোশাক কেনা শেষে ঈদের নামাজ আদায়ের নগরীর টুপি ও জায়নামাজ কিনতে ভিড় করছেন মুসল্লিরা। সেই সঙ্গে সুগন্ধিপ্রিয় মানুষজন ভিড় করছেন আতরের দোকানেও। এবারে টুপি ৫০ থেকে ১ হাজার টাকা, জায়নামাজ পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ২ হাজার টাকায়, আতর বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। ঈদের নামাজের অন্যতম অনুষঙ্গ টুপি ও জায়নামাজ। এজন্য ঈদের আগে শেষ মুহূর্তে কিনতেই ভিড় করছেন তারা।