জি এম ফিরোজ উদ্দিন, মণিরামপুর প্রতিনিধি
মণিরামপুরের সহ ইউনিয়নের কয়েক’শ নারী, পুরুষ ও কিশোরদের উপার্জনের মাধ্যম এখন রেইনট্রি গাছের ‘ভাইরাস’। প্রতিদিন তারা কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পযর্ন্ত গাছ থেকে ভাইরাস সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায়, মনোহরপুর, নেহালপুর, দূর্বাডাঙ্গা ও কুলটিয়া ইউনিয়নে এই কাজে জড়িতরা ভোরেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। এরপর সাদা বর্ণের ভেতর লালচে রঙের ভাইরাসযুক্ত ডালের সন্ধান করেন। যে গাছের ডাল সংক্রমীত বেশী, সেই ডাল ততো বেশি দামে গাছের মালিকের কাছ থেকে কেনেন তারা। ভাইরাসযুক্ত গাছের ডাল স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতি কেজি ৪৮০ টাকা থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। এরপর পিকআপ অথবা করিমনে করে চলে যাচ্ছে পাইকারি আড়তে। ওই এলাকার বেকার যুবকরাও এ ব্যবসার সাথ সম্পৃক্ত হচ্ছেন। প্রথমে সংক্রমিত গাছের ডাল দর কষাকষির মাধ্যমে গাছের মালিকের সাথে দাম ঠিক করে নেয়া হয়। পরে গাছ থেকে ডাল কেটে নারী শ্রমিকদের দিয়ে ভাইরাস ছাড়ানো হয়। ভাইরাস ছাড়ানোর পরে ওই ডাল বাড়িতে রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়। বিক্রির উপযোগী হলে বস্তায় করে স্থানীয় কুমারঘাটা, মনোহরপুর ও কেশবপুরের কলাগাছি বাজারে নিয়ে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পযর্ন্ত বিক্রি করা হয়। এই ব্যবসার সাথে জড়িত হাসান, আহম্মদ, বাবুল ও রনিসহ অনেকেই জানান, মনোহরপুর, কুমারঘাটা, দাশেরহাট, কুলটিয়া, মশিয়াহাটী, নেহালপুরসহ এলাকার বিভিন্ন স্থানের শিশু (রেইনট্রি) গাছ দেখে আসি। যেসব গাছে ভাইরাস হয়েছে সেগুলো থেকে তিন থেকে চার জন শ্রমিক নিয়ে সংক্রমিত ডাল কেটে ভ্যানে করে বাড়িতে এনে ভাইরাস ছাড়িয়ে বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে যাই। শুরুর দিকে এই ভাইরাস ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হলেও দাম কমেছে এখন। পাইকারি ব্যবসায়ী মুসা, সুমন, সবুজসহ আরো অনেকেই জানান, সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে কিনে আমরা অন্য জায়গায় বিক্রয় করি। এগুলো সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা কেজি দরে কিনে সাড়ে ৫শ’ টাকা দরে বিক্রি করি। মনোহরপুর বাজারের মো সুমন জানান, আমার মূলত ধানের আড়তের ব্যবসা। ‘ভাইরাসের’ ব্যবসাটা করছি। ভালো লাভও পাচ্ছি। এই ভাইরাস কী কাজে ব্যবহার হয় এমন প্রশ্নে আড়ত ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরাও সঠিক জানি না। তবে লোকমুখে শুনেছি এটা দিয়ে আসবাবপত্রে রং করার কাজে উন্নতমানের আঠা বা গালা তৈরি করা হয়ে থাকে। শিশু গাছে (রেন্ট্রি শিরিস গাছ)সংক্রমিক ছত্রাক এখন উপার্জনের মাধ্যম।যশোর জেলার মনিরামপুরের মনোহরপুর সহ আশপাশের এলাকার নারী পুরুষ শিশু কিশোর রা প্রতিদিন কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পযর্ন্ত গাছ থেকে ভাইরাস পোকার সন্ধ্যানে।স্হানীয় ব্যবসায়ী দের কাছে প্রতি কেজি পোকা ৪৮০ টাকা থেকে ৫০০ সত টাকা কেজি বিক্রয় করছেন।তারপর চলে যাচ্ছে পিকআপ অথবা করিমনে করে চলে যাচ্ছে পাইকেরি আড়ৎএ। তবে কে কিনছে আর কারা কিনছে তা বুঝাযাচ্ছে না।আর তারা কিনে কি করছে তা এখনও বোঝা যায়নি ঠিক ভাবে।তবে এর চাহিদা কিন্তু কম নেই।পোকার চাহিদার ভিড়ে অনেক তথ্য সঠিক ভাবে বোঝা যাচ্ছে না।শতশত নারী,পুরুষ,শিশু,কিশোররা এই পেশায় জড়িত।বেকার যুবকরাও এ পোকার ব্যবসায় বেশ এগিয়ে আছে।ভাইরাস ব্যবসায়ীদের চোখ এখন শিশু গাছের দিকে।দাড়িয়ে থাকা শিশু গাছে ভাইরাস পোকা। গাছের ডালে সাদা বর্নের ভিতরে লালচে রঙ্গের মত।সংক্রমিত গাছের ডাল বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।যে গাছ সংক্রমিত সে গাছের মালিকে ডেকে দরদাম ঠিক করে কাজের সাথে যারা সংশ্লিষ্টরা তার গাছের ডাল কেটে নারী শ্রমিকদের কাছে দিচ্ছে ডাল থেকে ভাইরাস ছাড়াতে।আবার ঐসংক্রমিত গাছের ডাল পালা বাড়ীতে রান্নার কাজে ব্যবহার হচ্ছে।ইনকাম ও হচ্ছে আবার রান্নার জ্বালানি ও বেশ পুশিয়ে যাচ্ছে।খুব যত্নসহকারে নারী শ্রমিকরা ডাল থেকে পোকা ভাইরাস পৃথক করছে।ভাইরাস পোকা বিক্রয়ের উপযোগি হলে বস্তায় করে স্হানী বাজার কুমারঘাটা,মনোহরপুর,ও কেশবপুরের কলাগাছি বাজারে নিচ্ছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পযর্ন্ত স্হায়ী ও অস্হায়ী দোকান বসে সেখানে তারা বিক্রয় করে। ইতোমধ্যে এই ভাইরাস পোকার কারবার করে বহু মানুষের কর্মসংস্হান হলেও ঠিক কতদিন চলবে এ পোকার ব্যবসা তা জানা নেই।এই ভাইরাস পোকার ব্যবসার সাথে জড়িত অনেকেই জানান হাচান,আহম্মদ,আজিম,বুলবুল,বাবুল ও মনোহরপুর,কুমারঘাটা, দাশেরহাট,মশিয়াহাটী সহ বালিধা এলাকায় শিশুগাছ দেখে আসি যে গাছে ভাইরাস পোকা হয়েছে সেগুলো।তিন থেকে চার জন শ্রমিক নিয়ে গাছ থেকে সংক্রমিত ডাল কেটে ভ্যানে করে বাড়ীতে এনে ভাইরাস ছাড়িয়ে বাজারে নিয়ে আসি বিক্রয়ের জন্য।প্রথমে এই ভাইরাস পোকার দাম ছিল ১০০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হলেও ক্রমশ আশাতীত যোগান পাওয়া দাম কমেছে। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়,বিভিন্ন শ্রেনীপেশার লোকজন এই পেশার লোকজন ভোরেই বেরিয়ে পড়ে পোকার সন্ধানে।যে গাছের ডালে সংক্রমিত বেশী সে ডাল ততোবেশী দামে বিক্রয় হচ্ছে।এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত যাচ্ছে ভাইরাস পোকার জন্য।খেয়ে না খেয়ে জিবিকার সন্ধানে ওরা।বেশী দামে বিক্রয় হচ্ছে এই ভাইরাস পোকা।জীবিকার তাগিতে এই পেশার সাথে জড়িত। পাইকারী ভাইরাস পোকা ব্যবসায়ী মুসা,সুমন সহ আরো অনেকেই জানান,খিতেল কাছ থেকে ক্রয় করে আমরা আবার পাইকারি অন্য জায়গায় বিক্রয় করি। ৪৫০ টাকা অথবা ৫০০ কেজি দরে ক্রয় করছি।বিক্রয় করছি ৫০০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা দরে বিক্রয় করি।মনোহরপুর বাজারের সদ্য পোকা ব্যবসায়ী মো সুমন জানান আমার মুলত ব্যবসা ধানের আড়ৎ তার ভিতরে ভাইরাসের ব্যবসা টা করছি যা লাভ হলো। কেনা দাম পড়ে ৪৭০ থেকে ৪৯০ টাকা আমরা বিক্রয় করছি ৫১০ থেকে ৫২০ টাকা করে।আমি এই ১৫ দিন যাবৎ।সুমনের কাছে আরো জানান এই ভাইরাস গুলো ওরা কিনে কি করছে তা কেউ বললো না। খুচরা যারা কেনে তারা বলেন,আমরা সংক্রমিত শিশু গাছ থেকে যে ডাল ভেঙ্গে আনা হয় তা আশ পাশের মহিলা শ্রমিক দিয়ে ছাড়ানো হয়।তাদের কে ৪০/৫০ টাকা কেজি প্রতি দিয়ে সে গুলো বস্তা ভর্তী করা হয়। সাংবাদিকের এক প্রশ্নের এই ভাইরাস কি কাজে ব্যবহার হয়। আড়ৎ ব্যবসায়ীরা বলেন,আমরাও সঠিক ভাবে জানি না।কি কাজে ব্যবহার করছেন।তবে লোকশ্রুতি তে আসে যে এটা আঠা কিংবা গালা তৈরী করছেন। এই ভাইরাস পোকা র ব্যপারে মনোহরপুর, কুমারঘাটা লোকজন বলেন,বহুদিন ধরে দেখছি রাস্তায় উঠলে ভ্যানে, কিংবা নসিমনে ভর্তী করে ভাইরাস নিয়ে যাচ্ছে।তবে শতশত লোকের আয়ের পথ বেরিয়েছে।তবে লোক মুখে শুনা যে এই ভাইরাস দিয়ে উন্নতমানের আঠা, বা গালা তৈরী করছে।বিভিন্ন আসবাপত্র তৈরী করতে যে আঠা বা রং তৈরী হচ্ছে বলে লোকমুখে শুনেছেন বলেও দাবি করেন তারা।