স্টাফ রিপোর্টার, যশোর :
যশোরে শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস, আবার কোনটিতে ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে। জরাজীর্ণ ভবনগুলোতে জীবনের ঝুঁকি থাকলেও কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। পুরাতন এসব ভবনের প্লাস্টার ও ছাদ খসে পড়লেও অনেকগুলো এখনো ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোড, সেন্ট্রাল রোড, জেল রোড, খালধার রোড, কাপুডিয়া পট্টি, এইচ এম এম রোড, এম এম আলী রোড, হরিনাথ দত্ত লেন, পোস্ট অফিস পাড়ার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী এলাকা, ষষ্ঠিতলা পাড়া, গুরুদাস বাবু লেন, বারান্দী মোল্যাপাড়া, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড ও বেজপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অনেক পুরাতন ও জরাজীর্ণ ভবন রয়েছে। যার অধিকাংশই অজ্ঞাত কারনে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি। ফলে এসব ভবনে মানুষ বসবাস ও ব্যবসা পরিচালনা করছে। ভবনগুলোর অধিকাংশ ফাটল ধরেছে এবং প্লাস্টার খসে খসে পড়ছে। ঝড় ও বর্ষা মৌসুমে জরাজীর্ণ ভবনগুলো বেশি বিপদজনক হয়ে ওঠে কারন ঝড় বৃষ্টিতে যে কোন সময় ভবনগুলো ধসে পড়তে পারে। পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বড় বাজার এলাকায় (কালী মন্দিরের আগে) জরাজীর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মৃত খবির মিয়ার পরিবার বসবাস করছেন। কাপুডিয়া পট্টির মা দুর্গা জুয়েলার্সের সামনে পুরাতন দুইতলা ভবন রয়েছে, যার নিচতলায় একাধিক দোকানঘর ও ২য়তলায় মানুষের বসবাস। পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাশেদ আব্বাস রাজ জানিয়েছেন, এসব জরাজীর্ণ ভবন যেকোন সময় ধসে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খুব শিগগির এসব ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা প্রয়োজন।ঘোপ নওয়াপাড়া রোডে একাধিক জরাজীর্ণ ভবন আছে। যার কোন কোনটি শত বছরের পুরোনো। তেমনি একটি ভবন ড্রিমডেল। ভবনের একাধিক স্থানে ফাটল ধরেছে এবং প্লাস্টার ও ছাদ খসে খসে পড়েছে। ভবনে ছোট ছোট গাছ জন্মেছে। স্থানীয়রা জানান, ড্রিমডেল একটি বিপদজনক ভবন, যতই দিন যাচ্ছে এটি আরো বিপদজনক হয়ে উঠছে।ঝড় বৃষ্টির দিনে আশেপাশের বাসিন্দাদের চিন্তার শেষ নেই কেননা যে কোন সময় ড্রিমডেল ভবস ধসে পড়তে পারে। দ্রুত ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ভেঙ্গে ফেলার জন্য পৌরসভার কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অন্যথায় ভবন ধসে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে দারভার পৌরসভার বহন করতে হবে।
সূত্র জানায়, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত ও তালিকা তৈরি কাজে দীর্ঘদিন ধরে যশোর পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কোন তোড়জোড় নেই। আবার জরাজীর্ণ ভবন মালিকদের চিঠিও দেওয়া হচ্ছে না। ফলে ঝূঁকিপূর্ণ ভবন ব্যবহারে মালিকদের আগ্রহের কমতি নেই। এ বিষয়ে যশোর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম শরীফ হাসান জানান, ২০১৩ সালে পৌর এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ছিল ১৮০টি। তার মধ্যে ১২০টি ভবন ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন আছে ৬০টি। এর মধ্যে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হলো ২নং ওয়ার্ডের বারান্দীপাড়া, খালধাররোড, বড় বাজার, ৩নং ওয়ার্ডের ঘোপ নওয়াপাড়া, সেন্ট্রাল রোড ও জেলরোড এলাকায়। এসব ভবন মালিকদের মধ্যে বিরোধের মামলা ও ব্যবসায়ীদের মামলা চলমান থাকায় সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। তবে মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার সাথে সাথে এসব ভবনগুলো ভেঙ্গে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি আরো জানান, নতুন করে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করা হবে।